মুবতাদা (مُبْتَدَأ ) এর পরিচয়। মুবতাদা (مُبْتَدَأ )এর প্রকার। মুবতাদা (مُبْتَدَأ ) চেনার আলামতসমূহ।

◆ মুবতাদা (مُبْتَدَأ ) এর পরিচয়ঃ 

আরবি ব্যকরণে জুমলার (বাক্যের) প্রথম অংশ হলো মুবতাদা( المبتدأ), যার মাধ্যমে কোন কিছু সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হয়। সাধারণত মুবতাদা (المبتدأ) একটি ইসম (اسم) বা বিশেষ্যজাত শব্দ হয়ে থাকে। বাংলা ব্যাকরণে একে বলা হয় উদ্দেশ্য।আর ইংরেজি  ব্যাকরণে সাবজেক্ট (Subject) ।

◆ সংজ্ঞাঃ 

المبتدأ هُوَ اِسْمٌ مَرْفُوْعٌ مُجَرَّدٌ عَنِ الْعَوَامِلِ اللَّفْظِيَّّةِ يَقَعُ فِيْ بِدَاءِ الْجُمْلَةِ

অর্থাৎ, মুবতাদা এমন একটি মারফু’ (উচ্চারণগতভাবে রাফ্ অবস্থায় থাকা) ইসম, যা বাক্যের শুরুতে আসে এবং যার সম্পর্কে পরবর্তী অংশে কোনো তথ্য দেওয়া হয়, যাকে বলা হয় “খবর“।

◆ মুবতাদা (المبتدأ) চেনার আলামতসমূহঃ

১. শব্দটি ইসম (الاسم) হওয়া:

মুবতাদা হওয়ার জন্য ইসম (اسم) শব্দ হওয়া আবশ্যক। কোন ফে’ল (فِعْلٌ) বা ক্রিয়াজাত শব্দ কিংবা হরফ (حرف) অব্যয়জাত শব্দ মুবতাদা হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

২. শব্দটি রফা’ অবস্থায় বিদ্যমান থাকা:

শব্দটির শেষ বর্ণ পেশবিশিষ্ট হওয়া বা শেষে ওয়াও (و)+ পূর্বাক্ষরে পেশ থাকা কিংবা শেষে আলিফ+নূন (ان) থাকা।

৩. মুবতাদা সাধারণত বাক্যের শুরুতে আসে:

মুবতাদা বাক্যের শুরুতে আসাটাই সাধারণ ব্যপার। তবে, এটি পরেও আসতে পারে। সেটা ব্যতিক্রম। 

৪. শব্দটি মারেফা (مَعْرِفَةٌ) হওয়া:

মুবতাদা হওয়ার জন্য অন্যতম শর্ত হলো শব্দটি মারেফা বা নির্দিষ্ট হওয়া। আরবি ব্যাকরণে নির্দিষ্ট করা বুঝায় কয়েকটি বিষয় দেখে।সেগুলো হলো—নামজাতীয় শব্দ, শুরুতে(ال) যুক্ত শব্দ, দ্বমির (ضَمِيْرٌ), ইসমে ইশারা (اِسْمٌ اِشَارَةٌ), ইসমে মাউসুল (اِسْمٌ مَوْصُوْلٌ),  মুদ্বাফ(مُضَافٌ), মুনাদা(مُنَادٰى)

◆ ব্যাখ্যাসহ উদাহরণঃ

১. رَشِيْدٌ عَالِمٌ 

মুবতাদা: رَشِيْدٌ  (রশিদ)

খবর: عَالِمٌ (একজন জ্ঞানী)

অর্থ: “রশিদ একজন জ্ঞানী।”

২. اَلزَّهْرُ جَمِيْلٌ 

মুবতাদা: اَلزَّهْرُ (ফুলটি)

খবর: جَمِيْلٌ  (সুন্দর)

অর্থ: “ফুলটি সুন্দর।”

◆ মুবতাদা (المبتدأ) এর প্রকারভেদঃ

মুবতাদা তিন প্রকারঃ
১। ইসমে সরীহ ( اِسْمٌ صَرِيْحٌ ) বা স্পষ্ট ইসম। 
  • যে ইসম নিজেই স্বাধীনভাবে স্পষ্ট করে নিজের অর্থ বুঝায়। 
  • উদাহরণঃ اَلْعِلْمُ نُوْرٌ (জ্ঞানই আলো) । 
২। যমীরে মুনফাসিল (ضَمِيْرٌ مُنْفَصِلٌ ) বা বিচ্ছিন্ন সর্বনাম। 
  • যে যমীরগুলো অন্য কোন শব্দের সাথে মিলে আসে না। অর্থাৎ, যমীরের পূর্ণরূপ। 
  • هُوَ – هُمَا- هُمْ এই জাতীয় যমীরগুলো ।
  • উদাহরনঃ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ (তারা সফলকাম) । 
৩। ইসমে মুয়াওয়াল বিসসরীহ (اِسْمٌ مُأَوَّلٌ بِالصَّرِيْح ) 
  • কোন বাক্যাংশ/বাক্যকে ব্যাখ্যা করে মুবতাদা (مُبْتَدَأ ) বানানো। 
  • উদাহরণঃ وَانْ تَصُوْمْ خَيْرٌ لَّكُمْ আয়াতাংশের তাবীল হলো– صِيَامَكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ 

◆ শেষ কথাঃ 

মুবতাদা আরবি বাক্য গঠনের মৌলিক ও প্রাথমিক একটি বিষয়। এ বিষয়ে যথাযথ জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে  বাক্যর গঠন কাঠামো ও নতুন বাক্য তৈরির পথ সুগম হতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top